জসীম উদ্দিন ইতি ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের আর্ট গ্যালারী মোড়ে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ অপরাজেয়-৭১ এর গ্রীল, ইট ও গেট চুরি করছে দুর্বত্তরা।
সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত টাঙ্গন নদীর তীরে অবিস্থত এই স্মৃতিসৌধে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, প্রতিদিন কয়েকশত দর্শনার্থী সেখানে ভীড় জমান, আড্ডা দেন। প্রত্যেক জাতীয় দিবসে সেখানে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসন সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করা হয়।
কিন্তু বর্তমানে স্মৃতিসৌধের চারপাশের প্রাচীরের কয়েক সারী ইট, মেইন গেট ও লোহার গ্রীলগুলো কে বা কাহারা চুরি করে নিয়ে যায়। এছাড়াও উত্তর পাশের প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। তাই মুক্তিযোদ্ধা, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ঠাকুরগাঁওবাসী। গত ঠাকুরগাঁও জেলা আইন শৃংখলা মিটিংয়ে বিষয়টি উত্থাপন হলেও অদ্যাবধি কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি বলে জানা যায়।
ঠাকুরগাঁও জেলা আ’লীগের ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন বলেন, বিষয়টি দু:খজনক। এটি সংরক্ষণ করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। এটি মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মৃতি। এটি ঠাকুরগাঁও জেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণে গুরুত্ব বহন করে। অপরাজেয়-৭১ এর চারপাশের গ্রীল ও ইট চুরির বিষয়টি খতিয়ে দেখে দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা সবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বদরুদ্দোজা বদর জানান, বিষয়টি জানেছি। ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জানানো হবে।
উল্লেখ্য যে, দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো ঠাকুরগাঁও জেলায় ও নির্মাণ করা হয় মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ‘অপরাজেয়-৭১’। স্বাধীনতার ৪২ বছর পর শহরের পাশে টাঙ্গন নদীর তীরে ‘অপরাজেয়-৭১’ নির্মাণ করা হয়। স্মৃতিসৌধটির নকশা ও ডিজাইন করেন প্রকৌশলী শাহরিয়ার আলম এবং ভাস্কর্য নির্মাণ করেন স্বাধীন চৌধুরী। ৭১ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট অপরাজয়-৭১’র বেদীর দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৯৭৬ বর্গফুট। বেদীতে ৬টি ধাপ ও সিঁড়ি স্থাপন করা হয়। ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ‘অপরাজেয়-৭১’ এর অর্থায়ন করে স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইএসডিও।